Showing posts with label Islamic Article. Show all posts
Showing posts with label Islamic Article. Show all posts

Saturday, 19 June 2021

দূর্ভাগা নয়তো কী?

 

ধরুন— আপনি রাস্তায় হাঁটছেন এবং আপনার চারপাশে অসংখ্য ডায়মণ্ডের ছড়াছড়ি। আকাশ পানে তাকিয়ে দেখছেন যে, ঝুম বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে মহামূল্যবান মণি-মুক্তো!

কিন্তু, এই ডায়মণ্ড একটিবারের জন্য আপনি ধরেও দেখলেন না। চারপাশে সবাই কুড়িয়ে নিচ্ছে সেগুলো দু'হাত ভরে৷ কিন্তু আপনি বিরক্ত হয়ে ঘরে এসে দরোজা লাগিয়ে দিয়ে বসে রইলেন।
পরেরদিন যখন আপনি মানুষের কাছে বলতে যাবেন, 'জানো, কাল না আকাশ থেকে ডায়মণ্ড-বৃষ্টি হয়েছে। ওমা, সে কী এক ব্যাপার! পথের যেদিকে তাকাচ্ছি কেবল ডায়মণ্ড আর ডায়মণ্ড! মানুষগুলো হুড়োহুড়ি করে কুঁড়িয়ে নিচ্ছিলো সব। কিন্তু ডায়মণ্ডও বাপু ফুরোবার নয়। যে যেভাবে পারছে ঘরে তুলছে। আমার এতো বিরক্তি লাগলো, জানো? আমি সোজা ঘরে এসে দরোজা লাগিয়ে বসে রইলাম'।
আপনার মুখে এই গল্প শোনার পর আপনার গল্প-শ্রোতা আপনাকে সর্বপ্রথম যে কথাটা বলবে তা হচ্ছে— 'তুমি তো আস্ত বেকুব দেখছি! আকাশ থেকে ডায়মণ্ড ঝরে পড়ছে, আর তা কুড়িয়ে না নিয়ে তুমি ঘরের কপাট লাগিয়ে বসে রইলে?'
রামাদান নিয়ে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খুব ভয়ানক একটা হাদিস আছে।
একবার মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, 'আ-মীন'।
তিনি সেদিন মোট তিনবার আ-মীন বলেছিলেন। কিন্তু সাহাবারা বুঝতে পারলেন না নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন প্রেক্ষিতে আ-মীন বললেন। তারা জিগ্যেশ করলেন, 'ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনাকে তিনবার আ-মীন বলতে শুনলাম। আপনি কি বলবেন কেনো আপনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে তিনবার আ-মীন বলেছেন?'
তিনবার আ-মীন বলার নেপথ্য কারণ সেদিন নবিজী সাহাবাদের জানিয়েছিলেন। সেই তিন কারণের একটা কারণ ছিলো এমন—
নবিজী বললেন, 'জিবরাঈল এসে বললো, যে ব্যক্তি রামাদান পেলো কিন্তু নিজের গুনাহসমূহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারলো না, সে ধ্বংস হোক'।
জিবরাঈল আলাইহিস সালামের এমন ভীতিপ্রদ দুয়াতে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন— আ-মীন।
দুয়াটা অবিশ্বাস্যরকম ভয়ানক এইজন্যে যে— এই দুয়াটা করেছেন ফেরেশতাকূলের সরদার জিবরাঈল, এবং তাতে 'আ-মীন' বলেছেন নবি-কূলের সরদার মুহাম্মাদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এই দুয়া যে অতি-অবশ্যই কবুল হওয়ার— তা নিঃসন্দেহ।
রামাদান পেলো, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে নিজের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে পারলো না, এমন ব্যক্তিকে এতো অভাগা হিশেবে এই হাদিসে উল্লেখের কারণ কী?
কারণ হলো— রামাদান এমন একটা মাস যে মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা জান্নাতের দরোজাগুলো খুলে দেন আর বন্ধ করে দেন জাহান্নামের দ্বার। এই মাসে প্রতিটা ভালো কাজ, ভালো আমল, ভালো নিয়্যাতের সওয়াব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেন বান্দার জন্যে। এতোকিছুর পরেও, এই মাসে এমন একটা রাত তিনি বরাদ্দ রেখেছেন, যে রাতটা হাজার মাসের চাইতে উত্তম! এই সুযোগ বছরে কেবল একবার-ই আসে।
রামাদান মাস আকাশ থেকে ডায়মণ্ড-বৃষ্টির দৃশ্যটার মতোই। এই মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা তাঁর রহমত দ্বারা পুরো পৃথিবীকে ঢেকে দেন। এমন একটা মাসে, এতো এতো সুযোগ সামনে পেয়েও যে লোক তা খেলাচ্ছলে হারায় কিংবা পাত্তা দেয় না, অথবা গল্পের লোকটার মতো ঘরের দরোজা লাগিয়ে বসে থাকে, সে দূর্ভাগা নয়তো কী?

সুরা ইউসুফ থেকে আমি যা শিখেছি..

 


ভাইদের কাছ থেকে বালক ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কিনে নিয়ে বণিকদল এমন একজন লোকের কাছে তাঁকে বিক্রি করলো, যিনি ওই সময়ে ছিলেন মিশরের মন্ত্রী। তার পদবি ছিলো আযীয।

ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কিনতে পেরে আযীয তো মহাখুশী! বালক ইউসুফ আলাইহিস সালামকে নিয়ে এসে আযীয তার স্ত্রীকে বললেন, 'এর থাকবার সু-বন্দোবস্ত করো। হতে পারে এর দ্বারা আমরা উপকৃত হবো অথবা তাকে পুত্র হিশেবেও আমরা গ্রহণ করতে পারি।' - সুরা ইউসুফ ২১
যে ঘটনা-আবহের কথা আমরা বলছি, তখন হাটে-বাজারে দেদারসে মানুষ বিক্রি হতো। আমরা এখন যেভাবে হাট-বাজার থেকে হাস-মুরগি-গরু-ছাগল কিনি, তখনকার দিনে সেভাবে মানুষ বিক্রি হতো। ঘটনাচক্রে এমনই এক পরিস্থিতির মুখে এসে পড়লেন ইউসুফ আলাইহিস সালাম।
ইউসুফ আলাইহিস সালাম ছিলেন ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সন্তান। ইয়াকুব আলাইহিস সালাম ছিলেন একাধারে নবি এবং তাঁর ছিলো ধনাঢ্য সংসার। তার সংসারে দুঃখ-কষ্ট নেই, আর্থিক দুরাবস্থা নেই, অস্বচ্ছলতা নেই। একটা রাজকীয় পরিবার এবং পরিবেশে বেড়ে উঠছিলেন ইউসুফ আলাইহিস সালাম।
ভাবুন তো— একটা রাজকীয় পরিবেশ থেকে মুহূর্তের ব্যবধানে ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কোথায় এসে দাঁড়াতে হলো? তাঁকে এসে দাঁড়াতে হলো এমন কিছু মানুষদের কাতারে যারা নিতান্তই গরীব আর অস্বচ্ছল। যাদের দিন কাটে দুঃখ-কষ্টে। যাদের ঘরে অন্ন সংস্থান নেই, পরিধানের কাপড় নেই। এমন কতিপয় মানুষদের কাতারে এসে পড়লেন তিনি যাদের চাল-চুলো নেই, ভাগ্যের ফেরে এখন যাদের ক্রীতদাস হয়ে জীবন কাটাতে হবে।
এ যেন আসমান থেকে মাটিতে পতিত হওয়ার মতো ঘটনা!
ইউসুফ আলাইহিস সালামের এই অবস্থা আমাকে যা শিক্ষা দেয় তা হচ্ছে— আমাদের জীবন সর্বদা একই গতিতে চলবে না। আর্থিক স্বচ্ছলতা, সুখ আর আনন্দ— কোনোকিছুই আমাদের জীবনে চিরস্থায়ী নয়। আজকে হয়তো আমার খাবার টেবিলে বাহারি পদের রান্না থাকছে, আগামিকাল আমার সামনে এক মুঠো ভাত না-ও জুটতে পারে। দামী কাপড় না হলে আজ হয়তো আমার চলছে না, আগামিকাল মানুষের দ্বারে দ্বারে একটুকরো কাপড় হন্যে হয়ে খোঁজা লাগতে পারে পরিধানের জন্য। সমানভাবে বিপরীতটাও সত্য। আজকের দুঃখ-কষ্ট, আজকের দুরাবস্থা আগামিকাল হয়তো স্বচ্ছলতা আর সামর্থ্যে ভরে উঠতে পারে। খোদ ইউসুফ আলাইহিস সালামের জীবনেই এর উদাহরণ আছে। তিনি ছিলেন এক রাজকীয় পরিবেশে। সেখান থেকে ক্রীতদাস হয়ে আসলেন মিশরে। মিশর থেকে তাঁকে কিনে নিলো সেখানকার মন্ত্রী এবং পুনরায় তাঁর জন্য নিশ্চিত করলো এক রাজকীয় পরিবেশ!
এই যে উত্থান-পতন, এটাই আমাদের জীবনের বাস্তবতা। এই দুই অবস্থার জন্যই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
মিশরের আযীয যখন ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কিনে এনে তাঁর স্ত্রীকে বললো, 'এর থাকবার সু-বন্দোবস্ত করো। হতে পারে এর দ্বারা আমরা উপকৃত হতে পারি', এই আয়াতটা নতুন এক ভাবনার দুয়ার যেন আমার সামনে উন্মুক্ত করে দিলো।
চিন্তা করুন— বালক ইউসুফ আলাইহিস সালাম যে একজন অসাধারণ মানবচরিত্র হবে ভবিষ্যতে, সে-ব্যাপারে আযীয কিন্তু কোনোভাবেই অবগত নয়। এই জ্ঞান তো আছে কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালার কাছেই৷ হঠাৎ করে দেখে কারো ব্যাপারে এরকম মন্তব্য করা— 'হতে পারে তাঁর দ্বারা আমরা উপকৃত হতে পারি', এটা কিন্তু এক অসাধারণ গুণের বহিঃপ্রকাশ। সেই গুণটা হলো— মানুষ চিনতে পারার ক্ষমতা।
আপনি বলতে পারেন— এরকম কোন ক্রীতদাস কিনলে তার কাছ থেকে যে-কেউই তো উপকৃত হওয়ার আশা করতে পারে। এখানে মানুষ চেনার কী আছে?
আপনার ভাবনা সত্যি হতো যদি আযীয তার স্ত্রীকে ইউসুফ আলাইহিস সালামের জন্য থাকার সু-বন্দোবস্ত করার কথা না বলতো। সাধারণ কোন ক্রীতদাস কিনে এনে কেউ কিন্তু তাকে রাজকীয় হালে রাখবার কথা ভাববে না। কিন্তু আযীয ভেবেছেন। ইউসুফ আলাইহিস সালামের মধ্যে যে অসাধারণত্ব আছে, তার খানিকটা আঁচ করতে পেরেছিলেন তিনি। এটাই তার মানুষ চেনার ক্ষমতা!
চারপাশে আমরা অসংখ্যবার শুনি, 'জীবনে মানুষ চিনতে শেখো, তাহলে ঠকবে কম'।
কথাটা কিন্তু মোটাদাগে সত্যি। জীবনে মানুষ চিনতে পারাটা এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যতোবেশি সঠিক মানুষকে জীবনে আমরা স্থান দেবো, সেটা হোক আমাদের বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী কিংবা সুহৃদ হিশেবে, ঠকে যাওয়ার মাত্রা ততোই কমে যাবে আমাদের জীবন থেকে। আর, যতোবেশি ভুল মানুষ আমাদের জীবনে আসবে, ততোই কঠিন হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
আসুন আমরা আমাদের জীবনের ইউসুফদের চিনতে শিখি।
'সুরা ইউসুফ থেকে আমি যা শিখেছি-০৫'

Thursday, 25 July 2019

'মজার ব্যাপার হচ্ছে, শয়তান যে জিনিসটা সবচাইতে ভালো বুঝে সেটা হলো মানুষের সাইকোলোজি।

1.
'মজার ব্যাপার হচ্ছে, শয়তান যে জিনিসটা সবচাইতে ভালো বুঝে সেটা হলো মানুষের সাইকোলোজি। 
সে জানে মানুষ কিসে প্রলুব্ধ হয়, কিসে তার আগ্রহ। মানুষের সাইকোলোজি বুঝেই শয়তান নিজের টোপ ফেলে। যেমন, আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালামকে সৃষ্টি করার পরে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা তাদের জান্নাতে থাকতে দিয়েছিলেন। তবে, সাথে জুড়ে দিয়েছেন একটা শর্ত, একটা নিষেধাজ্ঞা। কি ছিলো সেই শর্ত? জান্নাতের সবখানে তারা বিচরণ করতে পারবে, ঘুরে বেড়াতে পারবে, সবকিছুই ভোগ করতে পারবে, তবে নির্দিষ্ট একটা গাছের কাছে তারা যেতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞা মেনেই আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালাম জান্নাতে থাকতে শুরু করলেন। এই নিষেধাজ্ঞার ভিতর থেকেই শয়তান নিজের চালটা বের করে আনলো।
জান্নাতের পরমানন্দে অভিভূত হয়ে যান আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালাম। আহা! স্বপ্নও তো এতো সুন্দর হয়না। সেই অপরূপ নৈসর্গিগ স্বর্গোদ্যানে তারা খুব আনন্দের সাথেই দিন কাটাতে লাগলেন। এমনই আনন্দমুখর একটা দিনে, একদিন ইবলিশ শয়তান তাদের কাছে এলো। বললো, ‘আল্লাহ যে তোমাদের ঐ গাছটির নিকটে যেতে বারণ করলেন, তার কারণ জানো? তার কারণ হলো- তোমরা যদি ঐ গাছটার কাছে যাও এবং ঐ গাছের ফল খাও, তাহলে তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাবে, নয়তো তোমরা এখানে চির অমর হয়ে যাবে। যাতে তোমরা ফেরেশতা বনে যাওয়া কিংবা চির অমর হওয়ার সুযোগ না পাও, সেজন্যেই কিন্তু আল্লাহ তোমাদের ঐ গাছের কাছে ঘেঁষতেও নিষেধ করেছেন’।
বলা বাহুল্য, সৃষ্টিগতভাবেই নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বরাবরই বেশি। তারা হয়তো ভাবলো, ‘এতো পরমানন্দের সবখানে যাওয়ার, সবকিছু ছোঁয়ার, সবকিছু করার অনুমতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা দিয়েছেন, তাহলে কেবল ওই গাছটার নিকটেই বা কেনো যেতে বারণ করলেন? কি এমন আছে ওই গাছটায়?’
বুদ্ধিতে শয়তান মানুষের চেয়ে আরো কয়েক কাঠি সরেস। সে আরো বললো, ‘আমি কিন্তু তোমাদের শুভাকাঙ্খী। তোমাদের ভালো চাই বলেই কিন্তু কথাগুলো বললাম’। শয়তান যার শুভাকাঙ্খী হয়ে যায়, তার কি আর নতুন করে শত্রুর দরকার পড়ে? আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালামেরও নতুন শত্রুর দরকার পড়েনি। শয়তানের এহেন প্ররোচনায় প্রতারিত হয়ে তারা দু’জনে শেষ পর্যন্ত ওই গাছের ফল খেয়ে বসে এবং জান্নাত থেকেই বিচ্যুত হয়।
শয়তানের প্ররোচনার ব্যাপারটা খেয়াল করুন। সে কিন্তু খুব সাধাসিধে, স্পষ্টভাষী, এবং হিতাকাঙ্ক্ষী সেজেই আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালামের কাছে এসেছিলো, এবং তাদের সাইকোলোজি বুঝেই তাদের জন্য টোপ ফেলেছিলো। একটা নিষিদ্ধ জিনিসকে আকর্ষণের বস্তু বানিয়ে সেটার সাথে এমন দুটো জিনিসকে সে জুড়িয়ে দিয়েছে যা ক্ষণিকের জন্য আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহাস সালামের মনে জায়গা করে নিয়েছিলো। ফেরেশতা হয়ে যাওয়া কিংবা চির অমর হয়ে থাকা। মুহূর্তের জন্য এই দুটোর জন্য প্রলুব্ধ হয়ে উঠে তাদের মন। ফলে, তারা তাদের কৃত ওয়াদা ভুলে যায়, এবং ওই নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে বসে।
বাস্তব জীবনে শয়তানের চালগুলো এমনই। সে মানুষকে এভাবেই বিভ্রান্ত, পথভ্রষ্ট করে থাকে। সে কখনোই আপনার শত্রু বেশে আপনার সামনে হাজির হবেনা। সে আপনার সামনে আপনার চির হিতৈষী, চির শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে উপস্থিত হবে। সে প্রথমেই আপনার মন বুঝে নিবে। আপনি কোন জিনিসের প্রতি আসক্ত, আকর্ষিত সেটা জেনে নিয়ে, সেই মোতাবেক শয়তান আপনার জন্য টোপ ফেলবে।
সে আপনার মনে এই ধারণার উদয় করিয়ে দিবে যে, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। আপনাকে সে বোঝাবে- ‘দেখ বাপু! হতে পারে দূর্গাপূজা হিন্দুদের উৎসব। সেই উৎসবে গেলে তুমিও যে হিন্দু হয়ে যাবে, এমনটি কিন্তু কোথাও লেখা নেই। তুমি সেখানে গেলেই যে তোমার মুসলমানিত্ব নিয়ে টানাটানি পড়বে, তাও না। এটাকে তুমি হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব হিশেবে না দেখে কেবল একটা সাধারণ উৎসব হিশেবেই দেখো। তোমার বাড়ির পাশের একটা উৎসবই মনে করো। মনে করো সেখানে একটা মেলা হচ্ছে। তোমার সাদা মনে তো আর কোন কাঁদা নেই, তাইনা? ওই দেবীকে তো তুমি পূজোও করছোনা, তার পায়ে মাথাও ঠেকাচ্ছো না। কেবল একটু চিত্ত বিনোদনের উদ্দেশ্যেই যাচ্ছো। আরো কতোজনই তো যায়। এতে কি তাদের জাত যাচ্ছে, না ধর্ম লোপ পাচ্ছে?’
অথবা, শয়তান আপনাকে ওয়াসওয়াসা দিতে পারে এই বলে যে, ‘পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঘ-ভাল্লুক আর পেঁচার প্রতিমূর্তি মাথায় নিয়ে মিছিল করার মধ্যে খারাপ কিছু নেই। বরং, এগুলো তোমাকে দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিখাবে। তোমার মতোন কতো মুসলমানই তো এসব উৎসবে যায়, তাদের কি ধর্ম চলে গেছে?’
নতুবা, শয়তান আপনাকে বলবে, ‘একজন পর-নারীর সাথে বসে দু’দন্ড গল্প করলে, একটু সুখ-দুঃখের কথা বললে, দু’জনে কোথাও ঘুরতে গেলে, হাত ধরাধরি করে পার্কে হাঁটলে পাপ হয় না। তুমি তো আর তার সাথে অনৈতিক কাজে জড়াচ্ছো না। তোমার মনে তো এরকম কোন অসৎ অভিপ্রায় নেই। তুমি তো তাকে কেবল বন্ধুই ভাবো। ছোটবোনের মতোই দেখো। তাহলে, তার সাথে এহেন সম্পর্ক রাখতে দোষ কি?’
শয়তানের টোপগুলো এমনই। আপনার হিতাকাঙ্ক্ষী সেজে, আপনাকে আপাতঃ ‘ভালো বুদ্ধি’ দিয়ে সে আপনাকে দূর্গোপূজোয় নিয়ে ছাড়বে। পহেলা বৈশাখের বাঘ-ভাল্লুক আর পেঁচার মূর্তি মাথায় আপনাকে দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করাবে। আপনাকে সে পর-নারীর কাছাকাছি, পাশাপাশি নিয়ে যাবে আপনার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বুঝে। এভাবেই মূলত শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করে যার ওয়াদা সে আল্লাহর সাথে করেছিলো। ‘এবং আমি অবশ্যই তাদের পথভ্রষ্ট করবো’- আন নিসা ১১৯
[ অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি থেকে নেওয়া ]
লেখকঃ 
আরিফ আজাদ

মসজিদুল হারামে মাগরিবের সালাত শেষ হলো। প্রথম রাক'আতে ইমাম সাহেব তিলাওয়াত করেছেন সুরা আদ-দোহা ।

  একটু আগেই মসজিদুল হারামে মাগরিবের সালাত শেষ হলো। প্রথম রাক'আতে ইমাম সাহেব তিলাওয়াত করেছেন সুরা আদ-দোহা । সব আয়াত একবার করে তিলাওয়াত কর...